অনেক দিনের আমার যে গান

অনেক দিনের আমার যে গান
আমার কাছে ফিরে আসে
তারে আমি শুধাই,
তুমি ঘুরে বেড়াও কোন্‌ বাতাসে॥

যে ফুল গেছে সকল ফেলে
গন্ধ তাহার কোথায় পেলে,
যার আশা আজ শূন্য হল 
কী সুর জাগাও তাহার আশে॥

সকল গৃহ হারালো যার
তোমার তানে তারি বাসা,
যার বিরহের নাই অবসান
তার মিলনের আনে ভাসা।

শুকালো যেই নয়নবারি
তোমার সুরে কাঁদন তারি,
ভোলা দিনের বাহন তুমি
স্বপন ভাসাও দূর আকাশে॥



অন্তরে জাগিছ অন্তরযামী

অন্তরে জাগিছ অন্তরযামী।
তবু সদা দূরে ভ্রমিতেছি আমি ॥

সংসার সুখ করেছি বরণ,
তবু তুমি মম জীবনস্বামী ॥

না জানিয়া পথ ভ্রমিতেছি পথে
আপন গরবে অসীম জগতে।
তবু স্নেহনেত্র জাগে ধ্রুবতারা,
তব শুভ আশিস আসিছে নামি ॥




অরূপ তোমার বাণী

অরূপ, তোমার বাণী
অঙ্গে আমার চিত্তে আমার মুক্তি দিক্‌ সে আনি ॥

নিত্যকালের উৎসব তব বিশ্বের দীপালিকা--
আমি শুধু তারি মাটির প্রদীপ, জ্বালাও তাহার শিখা
নির্বাণহীন আলোকদীপ্ত তোমার ইচ্ছাখানি ॥

যেমন তোমার বসন্তবায় গীতলেখা যায় লিখে
বর্ণে বর্ণে পুষ্পে পর্ণে বনে বনে দিকে দিকে
তেমনি আমার প্রাণের কেন্দ্রে নিশ্বাস দাও পুরে,
শূন্য তাহার পূর্ণ করিয়া ধন্য করুক সুরে--
বিঘ্ন তাহার পুণ্য করুক তব দক্ষিণপাণি ॥




অসীম ধন তো আছে তোমার

অসীম ধন তো আছে তোমার,
তাহে সাধ না মেটে।
নিতে চাও তা আমার হাতে
কণায় কণায় বেঁটে ॥

দিয়ে    তোমার রতনমণি
আমায় করলে ধনী--
এখন    দ্বারে এসে ডাকো,
রয়েছি দ্বার এঁটে ॥

আমায় তুমি করবে দাতা,
আপনি ভিক্ষু হবে--
বিশ্বভুবন মাতল যে তাই
হাসির কলরবে।

তুমি    রইবে না ওই রথে,
তুমি   নামবে ধুলাপথে
যুগ-যুগান্ত আমার সাথে
চলবে হেঁটে হেঁটে ॥